ঢাকা , বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫ , ২৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ফের আইটেম গানে নাচবেন তামান্না সম্মানসূচক পাম ডি’অর পাচ্ছেন রবার্ট ডি নিরো মালাইকার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি সিআইডিতে আসছে নতুন এসিপি বাংলাদেশে আসছেন পাকিস্তানি গায়িকা আইমা বেগ হলে বাড়লো জংলির শো ছেলেকে নিয়ে ছুটি কাটাতে সিঙ্গাপুরে অপু নতুন ছবি নিয়ে পর্দায় আসছেন মোশাররফ করিম সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের নির্দেশ মাউশির ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘরে ঢ়ুকে নারীকে কুপিয়ে হত্যা মোদির মতো নেতাকে ছুড়ে ফেলার বিকল্প নেই -সারজিস আট মাসের শিশুকে অপহরণের পর বিক্রি, ৮ দিন পর যশোর থেকে উদ্ধার ঈদযাত্রার ১১ দিনে সড়কে ঝরল ২৪৯ প্রাণ নওগাঁ বাড়ির ভেতরে মিললো ভাইবোনের মরদেহ পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ নয় জাটকা সংরক্ষণের আহ্বান মৎস্য উপদেষ্টার ডিজিএফআই কর্মকর্তা হত্যা মামলায় আরসা প্রধানসহ ১০ জন কারাগারে মার্চে ৪৪২ নারী নির্যাতনের শিকার, ধর্ষণ ১৬৩ -মহিলা পরিষদ ১০ এপ্রিলের মধ্যে যোগদানের নির্দেশ প্রধান শিক্ষকদের বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে স্টার্টআপ খাতে ৯০০ কোটি টাকার তহবিল সবার অংশগ্রহণে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের প্রচেষ্টা -আলী রীয়াজ

উত্তপ্ত হচ্ছে রাজপথ

  • আপলোড সময় : ২০-০২-২০২৫ ১১:২১:১০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২০-০২-২০২৫ ১১:২১:১০ পূর্বাহ্ন
উত্তপ্ত হচ্ছে রাজপথ
* সংস্কার-নির্বাচন, নিত্যপণ্য ইস্যুতে চলছে মিছিল-সমাবেশ * জেলায় জেলায় চলছে বিএনপি’র ঘোষিত কর্মসূচি * দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে জামায়াত * জনস্বার্থ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি নেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের জুলাই বিপ্লবের পর আবারো গরম হচ্ছে দেশের রাজপথ। সংস্কার, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নিত্যপণ্যের মূল্য সহনশীল পর্যায়ে আনাসহ বেশ কিছু ইস্যুতে সারা দেশে প্রতিদিনই চলছে মিছিল-সমাবেশ। এসব সভা-সমাবেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের শক্তির জানান দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে বিএনপি সারা দেশের জেলায় জেলায় জনসমাবেশ করছে নিত্যপণ্যের মূল্য সহনশীল পর্যায়ে আনা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্র চক্রান্ত বন্ধ করা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামী দলটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে সারা দেশের মহানগর জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। আরেকধাপ রাজনীতির মাঠ গরম করেছে কুয়েটের একাডে?মিক কার্যক্রম স্থ?গিত এবং সব ভবনে তালা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, যৌক্তিক কিংবা অযৌক্তিক যেটাই হোক, দাবি হাসিলের ‘মোক্ষম জায়গা’ হয়ে উঠেছে রাজপথ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর যেন বয়ে যাচ্ছে দাবি-দাওয়ার বহর। হুটহাট সড়ক-মহাসড়কে নেমে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে যান চলাচল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকার শঙ্কা নিয়েই ঘর থেকে বের হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আন্দোলনের সামনে পড়লেই সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সীমাহীন বিপত্তির পাশাপাশি দিনের পরিকল্পনায় লেগে যাচ্ছে ভজকট। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক, নির্দিষ্ট গন্তব্যের গাড়ি রাস্তায় চলছে কিনা, তা নগরবাসীকে ৯৯৯-এ ফোন করে জেনে নেয়ার আহ্বানও জানিয়েছে খোদ ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে। নাজুক পরিস্থিতি পার করতে হয় পুলিশ বাহিনীকে। প্রথমে কয়েক দিন রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের দেখা যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই নানা সংগঠন, পেশাজীবী, ছাত্র-শ্রমিক বিভিন্ন দাবিতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করেন। জনস্বার্থ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি নেই : গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরও জনস্বার্থ ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো কর্মসূচি নেই। ব্যাবসায়ীরা গরীবের ডিম, আলু, পেঁয়াজ ও সবজির দাম রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এছাড়া নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে বাসা ভাড়া, বাস ভাড়া, তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে মানুষের অবস্থা করুণ। প্রতিদিনই রাজনৈতিক ব্যানারে হচ্ছে প্রতিবাদ, সভা-সমাবেশ। থাকছে দলীয় স্বার্থ, ক্ষমতার স্বার্থ। শুধু থাকছে না মানুষের পক্ষের কথা। পালিত হচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিও। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীণ অন্তর্বর্তী সরকার সাড়ে ৬ মাসের বেশি সময় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে। বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক টালমাটাল অবস্থা। দেশের হাসপাতালগুলোয় রোগীদের জায়গা দেয়ার মতো অবস্থা নাই। রফতানী আয় হ্রাস পেয়েছে, আমদানী সংকোচিত হচ্ছে। বিদেশী ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। দেশে দিন দিন বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। দরিদ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। শিক্ষার ব্যয় বাড়ায় মানসিক যন্ত্রণায় অভিভাবকরা। লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার। সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় মহাসংকটে দিন পার করছে লাখ লাখ নিম্ন আয়ের মানুষ। এমন ইস্যুতে বিএনপি-জামায়াত জাতীয় পার্টিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর রাজপথে কোনো ভূমিকা নাই। সবাই যার স্ব স্ব রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত। জেলায় জেলায় চলছে বিএনপি’র ঘোষিত কর্মসূচি : বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের সকল জেলায় জেলায় চলছে সমাবেশ। দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা এসব সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে জনমত গঠন করছেন। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার যশোরের টাউনহল ময়দানে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারে থাকা ছাত্র প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যদি সরকারে থাকার খায়েশ জাগে তাহলে পদ ছেড়ে নির্বাচনে আসুন। সরকারের বাইরে গিয়ে নতুন দল করুন আপত্তি নেই। কিন্তু সরকারে থেকে এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে না। আগে জাতীয় নির্বাচন দিন, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কোনোভাবেই আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিএনপি মেনে নেবে না। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিএনপিকে ভাঙার বহু চেষ্টা করে সফল হতে পারেনি। বিএনপি জনগণের দল। এ কারণে গত ১৭ বছর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। তার চূড়ান্ত বিজয় ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান। বর্তমান সরকার সংস্কারের যে কথা বলছে, বিগত ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া সেই একই কথা বলেছিলেন। এটি নতুন কোনো বিষয় না। তারপরও ভোটের জন্য যতটুকু সংস্কার দরকার ততটুকু করে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। আমরা আশাবাদী ইউনূস সরকার দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দেবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর লড়াই সংগ্রামের শেষ ইনিংস ছিল একমাসের চূড়ান্ত আন্দোলন। সেই আন্দোলন হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছে। আওয়ামী লীগ চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়ে পালিয়ে গেছে। এই পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচনটা এখন জরুরি। তিনি বলেন, দেশে পরিকল্পনাভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। যদি বিশৃঙ্খলা হয় নির্বাচন হবে না। নির্বাচন না হলে ফ্যাসিবাদের উল্লাস আবারও দেখা দেবে। তাই বিশৃঙ্খলা বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। বিশৃঙ্খলা যদি বাদ দিতে না পারি তাহলে ষড়যন্ত্রকারীদের হাত শক্তিশালী হবে। সেজন্য ছোটখাটো বিষয়গুলোকে পরিত্যাগ করতে হবে। দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে জামায়াত : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দলটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে সারা দেশের মহানগর জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। রাজধানীর পল্টনে আয়োজিত সমাবেশে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, সকল বৈষম্যের কবর রচনা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দয়া করে আমাদের দিকে কেউ আর চোখ রাঙানি দেবেন না। ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলবেন না। আমাদের ভদ্রতাকে যেন দুর্বলতা মনে না করেন। ভদ্রতা যখন শক্ত হয়, তা কেমন হয় দেশের জনগণ সাড়ে ১৫ বছর পরে টের পেয়েছে। জীবন দিয়েছি কিন্তু জামায়াতে ইসলামী কোন কুশক্তির সঙ্গে আপস করেনি। তিনি বলেন, আমরা আশা করি সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। এক এক করে মজলুমদের যেভাবে মুক্তি দেয়া হয়েছে একইভাবে এটিএম আজহারুল ইসলামকেকেও মুক্ত দিতে হবে। তিনি আর এক মিনিটও জেলে থাকুন আমরা সেটা চাই না। এ বিষয়ে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম বলেন, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘটিত ঘটনাটি নিয়ে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। তিনি বলেন, কুয়েটের ঘটনাটি দুঃখজনক ও অনাকাক্সিক্ষত। সেখানে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। পরবর্তীতে বের হয়ে আসছে ঘটনাটির সঙ্গে একটি ছাত্রসংগঠন জড়িত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, হল এবং সিট দখল চায় না, সেই অবস্থার প্রেক্ষাপটে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ব্লেইম গেইমের রাজনীতি বন্ধ করার আহ্বান জানান ড. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, প্রযুক্তির এই যুগে মিথ্যাচারের রাজনীতি থাকা উচিত নয়। ছাত্রশিবির বরাবরই ক্যাম্পাসে সহনশীল, নৈতিকতা ও আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করে আসছে। তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা উচিত। তিনি বলেন, বিগত দিনে ছাত্রলীগ যেভাবে ক্যাম্পাসে যে কাজগুলো করেছে, আমরা প্রত্যাশা করবো কোনো ছাত্র সংগঠন যেন সেই ভাষায় কথা না বলে। সেই পদ্ধতিতে রাজনীতি না করে। বরং এক সাগর রক্ত পাড়ি দিয়ে দেশের একটি বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের জন্য জনগণ তাকিয়ে আছে। আমরা মনে করবো সবাই ইতিবাচক মনোভাবের রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাবো। বিএনপি-জামায়াতের বিরোধ নিয়ে যা বলছেন বিশ্লেষকরা : রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কোন দল কতটা চাপ দিচ্ছে, এ বিবেচনায় যদি অন্তর্বর্তী সরকার কোনো নির্দিষ্ট দলকে প্রাধান্য না দেয়, তাহলে নির্বাচন ও সংস্কার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না। আর রাজনৈতিক মাঠে যেহেতু বিএনপি ও জামায়াত ছাড়া তৃতীয় আর কোনো বড় শক্তি নেই, সেহেতু তাদের মধ্যে বিরোধ হবে, এটাই রাজনীতির ধর্ম। এক্ষেত্রে দল দুটি যদি গঠনমূলক রাজনৈতিক চর্চা করে, তবেই তা দেশ ও জনগণের জন্য কল্যাণকর হবে। এ বিষয়ে ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেন, দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সবসময় মিত্রতা থাকে না। তাহলে রাজনীতি হয় না। একটা রাজনৈতিক দলের একটা স্বতস্ত্র রাজনীতি থাকবে, রাজনৈতিক পরিচয় থাকবে। সে তার প্রয়োজন মতো রাজনীতি করবে। প্রয়োজনে অন্য দলের সঙ্গে সে মিত্রতা করবে। সেটা হয়, সারা দুনিয়াতেই হচ্ছে। কোয়ালিশন রাজনীতি হয়, অ্যালায়েন্স পলিটিক্স হয়। আবার সেই অ্যালায়েন্স ভেঙেও যায়। নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেই দল (বিএনপি) হয়তো কোন হিন্টস (ইঙ্গিত) পেয়েছে (নির্বাচন) পিছিয়ে যাওয়ার। নির্বাচন পেছানোর ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতের বিরোধ কী ধরনের প্রভাব ফেলবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সাব্বির আহমেদ বলেন, এটা কোনো প্রভাব ফেলবে না। সিদ্ধান্ত নেবে তো সরকার। কোন তারিখে নির্বাচন হবে, সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। সেখানে আমি কোনো সমস্যা দেখি না। এটি সরকারকে চাপে রাখার কৌশলও হতে পারে। এখন পর্যন্ত দেশে নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র দেখছেন না বলেও মনে করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। কুয়েটের একাডে?মিক কার্যক্রম স্থ?গিত, সব ভবনে শিক্ষার্থীদের তালা : খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) একাডে?মিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়া?রি পর্যন্ত স্থ?গিত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সি?ন্ডিকেটের এক জরু?রি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি পূরণের জন্য দুপুর ১টা পর্যন্ত বেঁধে দেয়া সময় পার হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলো তালা লাগিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী পরিচয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত আমাদের আল্টিমেটাম ছিল। প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেয়া হয়নি। তাই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন, বিভিন্ন একাডেমিক ভবন ও বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। এরআগে পাঁচ দফা দাবিতে সকাল ৯টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের সামনে অবস্থান নেন। এই চিকিৎসাকেন্দ্রের দোতলায় চিকিৎসাধীন আছেন উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ। মঙ্গলবার রাতে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি সেখানে আছেন। বর্তমানে কুয়েটের পরিবেশ কিছুটা থমথমে রয়েছে। তবে কুয়েটের বাইরের দোকানপাট খুলেছে। প্রধান ফটকের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সেনাবাহিনীকে টহল দিতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ হল ছাড়ছেন। ক্যাম্পাসের বাইরে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে যারা ভাড়া রয়েছেন তাদের ভেতর ভয় এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে। অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন রয়েছেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় শতাধিক আহত হন। গতকাল রাতে ক্যাম্পাসের মেডিকেল সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না এবং থাকলে আজীবন বহিষ্কারের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি, ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা, বহিষ্কারসহ ব্যবস্থা নেয়া, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বাইরে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের রাখা, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় প্রশাসন থেকে বহন করা এবং ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ। এরআগে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশে করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও ছাত্রদল। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন। এর পরপরই বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা। ফলে ওই সময়টাতে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করে দু’পক্ষের মধ্যে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেছেন, দীর্ঘ ১৫ বছরে দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে গেছে। তাই যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা প্রয়োজন। আমি মনে করি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত যত দ্রুত সম্ভব একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। তাহলেই গণতন্ত্রের পথ সুগম হবে এবং বর্তমান উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সহজ হবে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তবে যারা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন ও সমাবেশ করছেন, তারা ভেন্যু হিসেবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহার করলে রাস্তা বন্ধ হবে না, যানজট কমবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স